জিল্লুর রহমান সাগর, মাগুরা >>
বৈষম্য
বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে ১৯ জুলাই গুলিতে আহত শাহরিয়ার সোহান (২৮) দীর্ঘ
৩৫ দিন বুকে বুলেট রেখে শেষ পর্যন্ত ঢাকায় মারা গেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬
টার দিকে ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত
সোহান মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের শাহ সেকেন্দার
আলীর ছেলে।
নিহতের
পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নিহত সোহান ঢাকায় ইনসেপ্টা
ফার্মাসিউটিক্যালসে চাকরি করতেন। দরিদ্র পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম
ব্যক্তি ছিলেন তিনি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে
দিশেহারা পরিবার। নিহত সোহানের পরিবারে তাঁর বাবা, মা, ছোট ভাই ও বউ
রয়েছে।
গত ১৯ জুলাই
সন্ধ্যায় ঢাকার রামপুরা এলাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র-জনতার
একটি মিছিল বের হয়৷ এ সময় আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সাথে তাদের ধাওয়া-পাল্টা
ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। কোম্পানির কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে হঠাৎ একটি গুলি তাঁর
পাজর দিয়ে ঢুকে স্পাইনালকটে আটকে যায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন
তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে দীর্ঘদিন
চিকিৎসার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালে ৩৫ দিন শরীরে আটকে
থাকা গুলি বের করার করতে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। অপারেশনের পর অতিরিক্ত
রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যতে পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া
বিরাজ করছে।
নিহত সোহানের
মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক
সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ তাকে ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালে দেখতে যান।
বুধবার সকাল ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রথম জানাযা
অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিকেল ৫ টায় শ্রীপুর পূর্বপাড়া ঈদগাহ ময়দানে জানাযা
নামাজ শেষে শ্রীপুর পূর্বপাড়া সম্মিলিত কবরস্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন হয়।
নিহতের
বাবা শাহ সেকেন্দার আলী বলেন, আমার ছেলে অনেক বড় স্বপ্ন ছিল। স্বপ্ন ছিল
লেখাপড়া শেষ করে অনেক বড় চাকরি করবে। সংসারে অভাব অনটনের জন্য সে লেখাপড়ার
পাশাপাশি চাকরি করতো। আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে এখন আমরা কিভাবে বাঁচবো?